অমনোযোগী ছাত্র

    কমল মাস্টারমশাইকে বলল, “আমি পড়ায় মন বসাতে পারছি না। পড়ার সময় রাজ্যের চিন্তা মাথায় চলে আসছে। রেজাল্ট ভালো করতে পারব না বোধহয়... ”

    ওর মা পাশে কিচেনে রান্না করছিল। বলল, “হ্যাঁরে সবে ক্লাস সেভেন। এর মধ্যে এরকম মানসিক সমস্যা দেখা হলে পরবর্তীকালে লেখাপড়ায় এগোবি কী করে? স্যার আপনি বুঝুন কী করবেন। ওকে যে ডাক্তার দেখাতে হবে মনে হয়।”

    মাস্টারমশাই বললেন, “বউদি, আপনার কোনও চিন্তা নেই। ডাক্তারের কাছে যেতে লাগবে না। আমি ওকে বুঝিয়ে দিচ্ছি।” তারপর কমলের দিকে চেয়ে মাস্টারমশাই বললেন, “আচ্ছা কমল, তুই আমায় শুধু বল কীসের কীসের চিন্তা এসে তোর মাথায় ঢোকে তুই যখন পড়তে বসিস?”

     কমল বলল, “স্কুলে কী কী হয়েছে, খেলার মাঠে বন্ধুদের সাথে কী হয়েছে, কে কী বলেছে, কেন বলেছে এইসব নানান জিনিস স্যার।”

    মাস্টারমশাই বললেন, “আমি তোকে একটা ফর্মুলা বলে দেব। সেই একটা ফর্মুলাতেই তোর এই রোগ একেবারে দূর হয়ে যাবে। শুনবি?”

    কমল বলল, “শুনব না মানে স্যার? আপনি আগে বলুন। খুব শুনব। আমার যা সমস্যা হচ্ছে ইদানীং!”

    মাস্টারমশাই বললেন, “এখন থেকে তুই মনে মনে স্থির কর, একটা সময়ে তুই একটা চিন্তা করবি, দুটো নয়। আসলে তোর মনে কী হচ্ছে আমি বুঝতে পারছি। তুই একটা চিন্তা যখন করছিস, ব্যাকগ্রাউন্ডে আর একটা চিন্তার ছবি চলে আসছে। ওই ব্যাকগ্রাউন্ডের চিন্তাটা বাদ দিতে হবে। মানে যদি ছবির কথা বলিস, তাহলে বলি, ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা করতে হবে। সেখানে কালার কিছু রাখা যাবে না। ওই সময় যদি অন্য কোনো চিন্তা আসে তাহলে সেটা মনের শেল্ফে তুলে রাখো পরে অনুশীলন করার জন্য। নিজেকে বলবি পড়া শেষ হলে ওই চিন্তাটা করব। তাহলে বোঝা গেল? একটা সময়ে একটা চিন্তা। অন্য চিন্তা আসলে সেটাকে ডিউ রেখে দাও। পরে করবে।”

     কমল বলল, “স্যার শুনতে ভালো লাগল। ঠিক আছে, আমি প্র‍্যাক্টিস করব।”

    কমল প্র‍্যাক্টিস করেছিল। এক সপ্তাহের মধ্যে ওর ওই সমস্যা দূর হয়ে গেছিল। 

    মাস্টারমশাইকে কমল থ্যাংকস জানিয়েছিল এবং মিষ্টি খাইয়েছিল।

বার্তা - একটা সময়ে একটা চিন্তা করতে হবে। তাহলেই মনোসংযোগ করা সহজ হবে।

আরও পড়ুন -

গল্প : মনোসংযোগ 

https://www.golpochura.com/2025/10/blog-post_3.html

গল্প : একমাত্র নীতি 

https://www.golpochura.com/2025/10/blog-post_64.html

গল্প : সবচেয়ে মূল্যবান 

https://www.golpochura.com/2025/10/blog-post_17.html